একদিন জলসিড়ি নদীটির পারে এই বাংলার মাঠে-
বিশীর্ণ বটের নীচে শুয়ে রবো; পশমের মতো লাল ফল
ঝরিবে বিজন ঘাসে, —বাঁকা চাঁদ জেগে র’বে—নদীটির জল
বাঙালি মেয়ের মতো বিশালাক্ষী মন্দিরের ধূসর কপাটে
আঘাত করিয়া যাবে ভয়ে ভয়ে—তারপর সেই ভাঙা ঘাটে
রূপসীরা আজ আর আসে নাকো, পাট শুধু পচে অবিরল,
সেইখানে কলমীর দামে বেঁধে প্রেতিনীর মতন কেবল
কাঁদিবে সে সারা রাত, – দেখিবে কখন কারা এসে আমকাঠে
সাজায়ে রেখেছে চিতা; বাংলার শ্রাবণের বিস্মিত আকাশ
চেয়ে রবে; ভিজে পেঁচা শান্ত স্নিগ্ধ চোখ মেলে কদমের বনে
শোনাবে লক্ষ্মীর গল্প—ভাসানের গান নদী শোনাবে নির্জনে;
চারদিকে বাংলার ধানী শাড়ি—শাদা শাঁখা বাংলার ঘাস
আকন্দ বাসবলতা ঘেরা এক নীল মাঠ—আপনার মনে
ভাঙিতেছে ধীরে ধীরে—চারদিকে এইসব আশ্চর্য উচ্ছ্বাস।