মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্যগুলির অন্যতম হল গ্রথন। গ্রথনের উপরেই মৃত্তিকার অন্যান্য ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য অনেকাংশ নির্ভর করে। মৃত্তিকার গ্রথন বলতে এর খনিজ কণা যথা বালুকা, কর্দম ও শিল্ট কণার পারস্পরিক পরিমাণগত আয়তনিক তারতম্য। বস্তুত পক্ষে গ্রথন বলতে মৃত্তিকাস্থিত ২ মিঃমিঃ ব্যাসযুক্ত খনিজ কণার (বালুকা, কর্দম ও সিল্ট) বিভিন্ন অনুপাতকে বুঝায়।
পরীক্ষাগারে মৃত্তিকার বিভিন্ন খনিজ কণার পরিমাণ নির্মিত হয় বলে ২ মিঃমিঃ ব্যাসযুক্ত খনিজ কণাকে গ্রথন নির্নয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কারণ ইহার বেশী ব্যাসযুক্ত শিলাখন্ড অর্ন্তভূক্ত হলে পরীক্ষাগারে উহাদের পরিমাণ নির্নয়ে বিস্তর অসুবিধা হয়৷ তাছাড়া ২ মিঃমিঃ ব্যাস পর্যন্ত কণাগুলি মৃত্তিকার ভৌত বৈশিষ্ট্য গুলিকে প্রভাবিত করে কিন্তু বৃহৎ প্রস্তরখন্ডগুলি তা করে না।
কোন কোন ক্ষেত্রে ২ মিঃ মিটারের বেশী ব্যাস কিন্তু ২০মিঃ মিঃ অপেক্ষা ক্ষুদ্র ব্যাসযুক্ত শিলাখন্ডের উপস্থিতি অনুসারে মৃত্তিকার গ্রথন বৈশিষ্ঠ্য নিরূপন করা হয়। যেমন গ্রাভেল যুক্ত বালি মাটিবা গ্রাভেল যুক্ত দোঁয়াস মাটি প্রভৃতি।
উপরিউক্ত ব্যাসযুক্ত প্রস্তর খন্ড ছাড়াও আরও বৃহত্তর প্রস্তর খন্ডের উপস্থিতি অনুসারে মৃত্তিকার গ্রথণ ভিত্তিক শ্রেণী বিভাগ করা হয়। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি সংস্থা (United States Department of Agriculture) কর্তৃক প্রণীত মৃত্তিকার শ্রেণীবিভাগে যাহা ‘সেভেন্থ অ্যাপ্রক্সিমেশান’ নামে পরিচিত বৃহৎ প্রস্তরের অবস্থান অনুসারে মৃত্তিকার বিশেষ নামকরণ
করা হয়েছে। যেমন গ্লুসেস্টার প্রস্তরময় দোঁয়াশ মৃত্তিকা বা গ্লুসেস্টার অতি প্রস্তরময় দোঁয়াশ মৃত্তিকা।
এভাবে বিভিন্ন আয়তনের ক্ষুদ্র কর্দম, পলি বা সিল্ট ও বালুকা কণা এবং প্রস্তর খন্ডের উপস্থিতি অনুসারে মৃত্তিকার গ্রথন ভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ করলেও সাধারণত মৃত্তিকার গ্রথন ভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ করতে 2 মিটার পর্যন্ত ব্যাস যুক্ত বালুকা, কর্দম ও সিল্ট কণার পরিমাণগত তারতম্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সুতরাং মৃত্তিকার গ্রথনগত শ্রেণীবিভাগের মূল ভিত্তি হল খনিজকণার আয়তনগত শ্রেণীবিভাগ এবং উহাদের পরিমাণগত তারতম্য নির্ণয়।
References
Study Material Elective Geo EGO : 05, Dr. Kumar Kole Jaydev 2007