১. ভারত ভাগ হয়েছে, ভাগ হয়েছে বাংলা । আমরা এপার বাংলায়, আমাদের এখনও বিদায়ের প্রাক্কালে বহু আপনজন ওপার বাংলায় (বাংলাদেশ)। অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় নি, বিদায় দিই । বৃটিশ চলে গেছে, ভেঙে গেছে দেশখানা । একটি ভারত, অন্যটি পাকিস্তান । ভাগ ভাগ ভাগ । পশ্চিমবঙ্গে জেলা ভাগ হয়েছে, আরও হবে ।
২. এবার প্রবেশ করি নিজের জেলা মুর্শিদাবাদে । মুর্শিদাবাদ তুমি খান খান হয়ে যাবে । কারো মত মুর্শিদাবাদ নামই থাকবে না – বহরমপুর, জঙ্গীপুর, কান্দী – এসব নাম হবে । কেউ বলেন – উত্তর মুর্শিদাবাদ, দক্ষিন মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বা পূর্ব মুর্শিদাবাদ হবে । এখন বড়ো বড়ো চিন্তাবিদরা কি করেন – জানি না । তবে এটা ভারত বাংলা ভাগের মতো ব্যাপার নয় । এটা দেশের মাঝের কথা ।
আমরা আশাবাদী মুর্শিদাবাদ তুমি বাদ না হয়ে যাও । কেউ যেন এই নামটি সিন্দুকের মধ্যে ঢুকিয়ে না রাখে ।
মুর্শিদাবাদ তুমি তো ভাগ হবে । তোমার নবাব প্যালেস কোন্ দিকে থাকবে ? মুর্শিদ কুলি খাঁ – তোমার নামেই তো মুর্শিদাবাদ হয়েছে, তুমি কোন্ দিকে যাবে । তুমি যে দিকেই থাক তুমি মুর্শিদাবাদের জনগনের অন্তরে থাকবে,তুমি বাঙালীর অন্তরে থাকবে,ভারতবাসীর ছলছল জলে সিরাজ বিরাজ করবে । ভাগ হলেও কিছু নাম থেকে যাবে । মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে, থাকবে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় মুর্শিদাবাদ শাখা । প্রশাসনিক কাজকর্মের জটিলতা কমাবার জন্য এ জেলা ভাগ । এই জেলা বিভিন্ন দিক থেকে পিছিয়ে ছিল, আজও পিছিয়ে ।
৩. মুর্শিদাবাদের লোক অভাবী সংসারে বাবা-মা, ভাই বোন, স্ত্রীকে রেখে দূর দুরান্তে রাজমিস্ত্রির কাজে পড়ে আছে । জেলা ভাগ হলে এলাকায় উন্নত পর্যায়ে কৃষিকাজ শুরু হোক, শিল্প কারখানা গড়ে উঠুক – আমি আশাবাদী ।
8.পরিশেষে বলি –
- স্বাধীনতা আন্দোলনে রক্তক্ষয়ী মুর্শিদাবাদ
- গঙ্গার জলে স্নাত মুর্শিদাবাদ
- মানবিকতার মূর্তপ্রতীক মুর্শিদাবাদ
- ভাগের প্রাক্কালে চেয়ে দেখি অক্ষত মুর্শিদাবাদ ।