তালগাছ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে। মনে সাধ কালো মেঘ ফুঁড়ে যায়, একেবারে উড়ে যায়- কোথা পাবে পাখা সে।। তাই তো সে ঠিক তার মাথাতে গোল গোল পাতাতে ইচ্ছাটি মেলে তার মনে মনে ভাবে বুঝি ডানা এই, উড়ে যেতে মানা নেই বাসাখানি ফেলে তার।। সারাদিন ঝরঝর থত্থর কাঁপে পাতাপত্তর, ওড়ে যেন […]

Continue Reading

অপযশ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বাছা রে, তোর চক্ষে কেন জল কে তোর যে কী বলেছে আমায় খুলে বল। লিখতে গিয়ে হাতে মুখে মেখেছ সব কালি নোংরা বলে তাই দিয়েছে গালি ছি ছি উচিত একি পূর্ণশশী মাখে মসী নোংরা বলুক দেখি।। বাছারে তোর সবাই ধরে দোষ আমি দেখি সকল- তাতে এদের অসন্তোষ খেলতে গিয়ে কাপড়খানা ছিঁড়ে খুঁড়ে এলে তাই কি […]

Continue Reading

প্রার্থনা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর আপন প্রাঙ্গনতলে দিবসশর্বরী বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি, যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যেথা নির্বারিত স্রোতে দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায় অজস্র সহস্রবিধ চরিতার্থতায়, যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি বিচারের স্রোতঃপথ ফেলে নাহি গ্রাসি- পৌরুষেরে করে নি শতধা, নিত্য যেথা […]

Continue Reading

এক গাঁয়ে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার দুজন একটি গাঁয়ে থাকি, সেই আমাদের একটিমাত্র সুখ। তাদের গাছে গায় যে দোয়েল পাখি তাহার গানে আমার নাচে বুক। তাহার দুটি পালন- করা ভেড়া চড়ে বেড়ায় মোদের বটমূলে, যদি ভাঙে আমার খেতের বেড়া কোলের পরে নিই তাহারে তুলে। আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা, আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা, আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচজনে, […]

Continue Reading

প্রশ্ন – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মাগো গো, আমায় ছুটি দিতে বল, সকাল থেকে পড়েছি যে মেলা। এখন আমি তোমার ঘরে বসে করব শুধু পড়া-পড়া খেলা। তুমি বলছ দুপুর এখন সবে, না- হয় যেন সত্যি হল তাই। একদিনও কি দুপুরবেলা হলে বিকেল হল মনে করতে নাই? আমি তো বেশ ভাবতে পারি মনে- সুয্যি ডুবে গেছে মাঠের শেষে, বাগদি- বুড়ি চুবড়ি ভরে […]

Continue Reading

বিদ্যাসাগর – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত ভারতে। করুণার সিন্ধু তুমি, সেই জানে মনে, দীন যে দীনের বন্ধু !- উজ্জ্বল জগতে হেমাদ্রির হেম-কান্তি অম্লান কিরণে। কিন্তু ভাগ্য-বলে পেয়ে সে মহাপর্বতে, যে জন আশ্রয় লয় সুবর্ণ-চরণে, সেই জানে কত গুণ ধরে কত মতে গিরীশ কি সেবা তার সে সুখ-সদনে!- দানে বারি নদীরূপ বিমলা কিংকরী; যোগায় অমৃত ফল পরম আদরে […]

Continue Reading

বঙ্গভাষা – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

হে বঙ্গ ভাণ্ডার তব বিবিধ রতন;- তা সবে, ( অবোধ আমি!) অবহেলা করি, পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ পরদেশে ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি। কাটাইনু বহু দিন সুখ পরিহরি! অনিদ্রায়, অনাহারে সপিঁ কায়, মনঃ, মজিনু বিফল তাপে অবরেণ্যে বরি;- কেলিনু শৈবালে; ভুলি কমন-কানন! স্বপ্নে তব কুললক্ষী কয়ে দিলা পরে,- “ওরে বাছা মাতৃ-কোষে রতনের রাজি, এ ভিখারি- দশা তবে […]

Continue Reading

অতি কিশোরের ছড়া – সুকান্ত ভট্টাচার্য

তোমার আমায় নিন্দে করে দাও না যতই গালি, আমি কিন্তু মাখছি আমার গালেতে চুনকালি, কোনো কাজটাই পারি নাকো বলতে পারি ছড়া, পাশের পড়া পড়ি না ছাই পড়ি ফেলের পড়া। তেতো ওষুধ গিলি নাকো, মিষ্টি এবং টক খাওয়ার দিকেই জেনো আমার চিরকালের সখ। বাবা-দাদা সবার কাছেই গোঁয়ার এবং মন্দ, ভাল হয়ে থাকার সঙ্গে লেগেই আছে দ্বন্দ্ব। […]

Continue Reading

জ্ঞানী – সুকান্ত ভট্টাচার্য

বরেনবাবু মস্ত জ্ঞানী, মস্ত বড় পাঠক, পড়নে তিনি দিনরাত্তির গল্প এবং নাটক, কবিতা আর উপন্যাসের বেজায় তিনি ভক্ত, ডিটেকটিভের কাহিনীতে গরম রক্ত, জানেন তিনি দর্শন আর নানা রকম বিজ্ঞান জোতিষশাস্ত্র জানেন তিনি, তাইতো আছে দিক- জ্ঞান; ইতিহাস আর ভূগোলেতে বেজায় তিনি দক্ষ,- এসব কথা ভাবলেই তাঁর ফুলতে থাকে বক্ষ। সব সমায়েই পড়েন তিনি, সকল থেকে […]

Continue Reading

সুচিকিৎসা – সুকান্ত ভট্টাচার্য

বদ্যিনাথের সর্দি হল কলকাতাতে গিয়ে, আচ্ছা করে জোলাপ নিল নস্যি নাকে দিয়ে। ডাক্তার এসে, বলল কেশে, “বড়ই কঠিন ব্যামো, এসব কি সুচিকিৎসা ? আরে আরে রামঃ আমার হাতে পড়লে পরে এক্স-রে করে দেখি রোগটা যেমন কঠিন কিনা- আসল কিংবা মেকি। থার্মোমিটার মুখে রেখে সাবধানেতে থাকুক আইস ব্যাগটা মাথায় দিয়ে একটা দিন তো রাখুক। ইঞ্জেকশান নিতে […]

Continue Reading