কমলা নাপিত – উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

সাহিত্য দর্পণ

একদিন কিনা কমলা নাপিত লাঙল নিয়ে কাঁধে

ক্ষেত গেছল চাষ করতে। আর কে লাঙল ফাঁদে।

বাঘ এসে বললে তখন, ‘তুই না বেটা চাঁই ?

কোথা যাবি কমলা নাপিত, তোরে ধরে খাই।’

নাপিত বললে, ‘ওরে বাঘ! তুই যে ভারী বোকা।

ভরবে না পেট এখন খেলে, দেখছিস আমি রোগা।

ধান হলে ভাত খেয়ে হব মোটা তাজা;

তখন বরং আমায় খেয়ে দিস রে ব্যাটা সাজা।’

বাঘ ভাবলে ভালই কথা, ‘ধান হবে কবে ?”

‘তোমরা এসে লাঙল টান, জলদি হবে তবে।’

বুড়া বাঘ বন থেকে আরেক বাঘ এনে,

চাষ করে দিল ক্ষেত, লাঙল টেনে টেনে।

তার পরে হলো ধান; বাঘেরা সব মিলে

ধানের বোঝা বয়ে নিয়ে ঘরে পৌঁছে দিলে।

ঘরের দুয়ার বন্ধ করে বললে নাপিত আস্তে,

‘ল্যাজে বেঁধে ফুটো দিয়ে, দাও তো বাঘ কাস্তে।’

বুড়া বাঘ লেজ বাড়িয়ে কাস্তে যেই দিল,

অমনি নাপিত কুচ করে লেজটি কেটে নিল।

বেজায় রেগে বাঘের পাল বলে, ‘ওরে দুষ্ট!

বাগে পেলেই করব তোরে ভাত খাইয়ে পুষ্ট।’

বনে গেলে বাঘের পাল, নাপিত বলে হেসে-

‘আমি হচ্ছি বাঘের চাঁই, নইকো আমি যে সে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *